মিম শব্দটি রিচার্ড ডাউকিন্স ১৯৭৬ সালে তার বই ‘দ্য সেলফিস জিন’ এ প্রথম ব্যবহার করেন। তিনি এ বইয়ে বলেছেন মিম হল একটি ধারণা যা এক মস্তিষ্ক থেকে অন্যটায় ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে অক্সফোর্ড অভিধানের ভাষায়, মিম হল কোন ছবি বা ভিডিও বা শব্দ গুচ্ছ যা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে দেয় এবং একটা থেকে প্রায়শই অন্যটি ভিন্নতর বা বৈচিত্রপূর্ণ হয়।
আরেকটু পেছনে গেলে আমরা দেখতে পাই, ‘মিম’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘মিমেমা’ থেকে, যার অর্থ এমন কিছু, যাকে অনুকরণ করা হয়।
যেকোনো ইন্টারনেট কনটেন্টই ‘মিম’ হতে পারে। যেমন ফটোশপ করা ছবি, ভিডিও, গানের ভিডিওতে মূল কথা বদলে ‘মিসহার্ড’ লিরিক ইত্যাদি থেকে শুরু করে ক্লাসিক আর্ট থেকেও মানুষ মিম তৈরী করে। তবে মিমের টপিক হতে পারে দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো কিছু, এমনকি ইতিহাস, রাজনৈতিক প্রতিবাদ, কর্পোরেট প্রেজেন্টেশন, কিংবা এডভার্টাইজিংয়ের মতো টপিকেও মিমের ব্যবহার হয়।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মিম জনপ্রিয়তা পায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুকের জনপ্রিয়তার সাথে বাংলাদেশি মিম কালচারের সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এদেশে ফেসবুক ব্যবহারের যাত্রার একদম শুরুতে মিম কালচার সম্পর্কে সবাইকে খুব অবহিত না থাকলেও পরবর্তীতে ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে মিম কালচার বেশ পরিচিতি পেতে থাকে। বাংলাদেশি মিম কালচারের প্রথমার্ধে ট্রল ফেসকে মিম টেমপ্লেট হিসেবে ব্যবহার করে মিম তৈরী হলেও এরপর ধীরে ধীরে বিদেশী মিম টেমপ্লেট ব্যবহার শুরু হয়, এরপর ধারাবাহিকভাবে এই মিম কালচারে যুক্ত হয় বাংলাদেশি মিম টেমপ্লেট। অর্থাৎ, বাংলাদেশি নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপন, পোস্টার, নিউজ, কার্টুন শো, এমনকি নানান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড দেয়া বিভিন্ন রকম ভিডিওর ক্লিপ/স্ক্রিনশট থেকে। যার ফলে মিম লাভারদের কাছে মিম আরও সহজবোধ্য হয়ে ওঠে, মিমের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং প্যারালালি মিমারের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু বাংলাদেশি মিম কমিউনিটি রয়েছে। যেখানে প্রতিনিয়ত নানান ধরণের টপিকে মিম তৈরী হয়ে যাচ্ছে।