ছবিটা দ্যাখেন।
ছবিটা কেন ইনট্রিগিং?
আসেন, ইমেজটা পাঠ করি।
কামড়ে ধরা ঠোট। জেল দেয়া, ব্যাকব্রাশ করা চুল। ভ্রু কুচকায়ে ফেলা সরু নজর বা স্কুইন্টেন্ড আইজ আর তার ফলে কপালের চামড়ায় তৈরি হওয়া ভাঁজ। চোখে রোদচশমা।
কী আছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের এই ছবিতে? ছবিটা কেন আমাদেরকে ইনট্রিগ করে?
এইটা বহুমূখী ও জটিল এটিট্যুডের ১টা ছবি।
লুৎফুজ্জামান বাবরের এই ইমেজের মেজাজ ও ফিলসফির সাথে ১জন মার্কিন অভিনেতার মিল আছে। ভদ্রলোকের নাম বিল মারে।
ছবিটা যেন বিল মারের চরিত্রগুলার মতো। যে আইরনিক এবং ১ই সাথে আইরনিক সে বিষয়ে সচেতন। ফলে কোনো স্থির রিয়েলিটিতে সে বাস করতে পারে না। ঘরহীন এক ফ্লুয়িড জগতে তার বসবাস, যার স্থির কোনো ফিচার নাই। এক্সিস্টেনশিয়ালি সে থাকে ১ ত্রিশঙ্কু অবস্থায়।
নিরন্তর আইরনির ১ জগতে সে বাস করে। সে আইরনি করে না, কিন্তু নিজেই আইরনির প্রতিমূর্তি। সার্কাজম সে করে না– নিজেই মূর্তিমান সার্কাজম।
ছবিটা নিশ্চয়ই পুরান। ২০০১-৬ সালের মধ্যে কোনো ১ সময়ের। তখন আমি খুব ছোট বইলা ছবিটার ব্যাপারে সেই সময়ের পাবলিক রিয়্যাকশন কেমন ছিল জানি না। জুলাই মাসের শুরুতে ছবিটা ব্যাপক ট্র্যাকশন পাইতে শুরু করে। ছবিটা নিশ্চয়ই আগের কিন্তু এই সময়ে রিসার্ফেস করতে শুরু করে। আর বাবরের জামিনের পর থেকে আরও ব্যাপক মাত্রায় ছড়াইতে শুরু করে।
কিন্তু ১টা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
২১ শতকের ১ম দশকে, যখন বাংলায় ইন্টারনেট সুলভ হয় নাই, এই ছবি বিশেষভাবে ভাইরাল বস্তু তো দূরের কথা
এইটার স্পেশালিটি শনাক্ত করার ‘বাস্তবতার’ও তখন দেশে ছিলো না।
লুৎফুজ্জামান বাবরের এই ছবিতে আইরনি আছে। কাউন্টার-কালচারের সোয়াগ (swag) আছে। সোয়াগ, স্যাভিজারি ও ব্যাড-এ্যাসগিরি ছবিটাতে ১ইসাথে আছে।
এইটা ১টা ফিলসফিকাল ইমেজ।
কার ইমেজ, কোন প্রেক্ষিতের ইমেজ তারও বিষয় আছে।
ধরেন, এই ১ই ছবি সালমান মুক্তাদিরের হইলে হয়তো ভাইরাল হইতো না। রাজনীতির মাঠের ১ পলিটিকাল ফিগারের এইরকম ছবি অ-স্বাভাবিক, চমকপ্রদ। ফলে মনোযোগ আকর্ষনীয়।
R১টা কারণ আছে।
কোনো ইমেজের মানে(গুলা) যে প্রতীকী ডোমেইনে অপারেট করে, বাবরের ক্ষেত্রে সেই ক্ষেত্র বা ডোমেইনটা ফ্লুয়িড— ফ্লেক্সিবল বইলা এইখানে যেকেউ যার যার মতো নিজেদের (পুংটামিমূলক) ডিজায়ার্ড মিনিং এই ছবিতে ইনসার্ট (আরোপ) করতে পারে।
এইটা এই যুগে ভাইরাল বা মিমেটিক টেমপ্লেট হওয়ার অন্যতম শর্ত।
ছবিটা, আইকনিক—এইসব এবং আরও নানান কারণে।
আমার প্রেডিকশন হইতেছে, ফিউচারে এই ছবি বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার রিসার্ফেস করতে থাকবে। ছবিটা বাংলাদেশে সোয়াগ, ব্যাড-এ্যাসগিরি ও স্যাভিজারির ১টা চিরস্থায়ী মিম টেমপ্লেট হয়ে উঠবে।
লিখেছেন – K M Rakib